কথিত আছে গৌতম বুদ্ধ আশ্বিনী পূর্ণিমায় তার মাথার চুল আকাশে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাই আশ্বিনী পূর্ণিমায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা আকাশে শত শত ফানুস উড়িয়ে গৌতম বুদ্ধকে স্মরণ করেন।
মারমা সম্প্রদায় এই উৎসবকে ‘ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে’ বা প্রবারণা পূর্ণিমা হিসেবে পালন করে থাকেন।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা পুরো তিন মাস বর্ষাবাস পালন করার পর অপেক্ষায় থাকে এই দিনটির জন্য। এসময় পাহাড়ি পল্লীগুলোতে শুরু হয় উৎসবের আমেজ। প্রতিবছর খেলাধুলা, গানবাজনাসহ নানারকম সামাজিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ উৎসব পালন করা হয়।
তবে করোনা মহামারির কারণে ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে উৎসবে এবার প্রাণ নেই। ৩১ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া দুই দিনের এ উৎসবে থাকবে স্বাস্থ্যবিধি মানার বাধ্যবাধকতা। এবার অনুষ্ঠানে অনেক কাটছাট করেছেন আয়োজকেরা।
উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক কোকোচিং মারমা জানান, ধর্মীয় অনুষ্ঠানের বাইরে জনসমাগম হয় এমন অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। রথযাত্রা পরিচালিত হবে স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে। শুধু বুদ্ধের পূজারীরা রথের দর্শন পাবেন। রথযাত্রায় সাধারণ দর্শনার্থীদের অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে না।
বান্দরবানে এ উৎসবের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে মঙ্গলশোভা রথযাত্রা। রথের ওপর বুদ্ধ মূর্তি স্থাপন করে রথটি টেনে পুরো শহর ঘুরিয়ে সাঙ্গু নদীতে বিসর্জন দেয়া হয়। এ সময় নানা রকম নৈবেদ্য ও মোমবাতি জ্বালিয়ে বুদ্ধ মূর্তি দর্শন করেন পূজারীরা। রথের পেছনে সর্বস্তরের মানুষ মারমাদের ঐহিত্যবাহী গান গেয়ে ঢোল বাজিয়ে এতে যোগ দেন।
ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে উৎসবের প্রস্তুতি
বান্দরবান সরকারি কলেজের ছাত্র অংমেসিং মার্মা বলেন, ‘প্রতি বছর অক্টোবর মাসের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি। কিন্তু এই বছর বিগত বছরের মতো উৎসবের আমেজ নেই। সংক্রমিত হবার ভয়ে অনেকেই ঘরে অবস্থান করবেন ।’
বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম জানান, উৎসবকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্যে নিরাপত্তা জোরদারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে উৎসবের প্রস্তুতি